Thursday , March 30 2023

Chardham Yatra 2022: খুলে গেল কেদারনাথ মন্দিরের দরজা, জানুন মন্দিরের ৮ টি অজানা রহস্য

Kedarnath Temple-এর দরজা খুলে গেল ৬ মে শুক্রবার ভোরে। এদিন সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে বৈদিক মন্ত্রোচ্চারণের মধ্যে দিয়ে দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম কেদারনাথ মন্দিরের দরজা পূণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।মন্দির খোলার সময় ১০ হাজারেরও বেশি পূণ্যার্থী কেদারনাথের প্রথম দর্শন পেতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বাস অনুসারে এই মন্দিরের প্রদীপ কখনও নেভেনা। দরজা খোলার পর সেই আগুনের দর্শন পাওয়া অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। যারা সেই প্রদীপ দর্শন করতে পারেন, তাঁদের আর পুর্নজন্ম হয় না বলে প্রচলিত বিশ্বাস। শীতকালে মন্দিরের দরজা বন্ধ করার সময় এই প্রদীপ জ্বালানো হয়। এত মাস পর মন্দিরের দরজা খোলার পরও সেই প্রদীপ জ্বলতে দেখা যায়। ভক্তদের বিশ্বাস শীতকালে স্বর্গ থেকে দেবতারা নেমে এসে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখেন।

এই কেদারনাথ মন্দির এর সাথে জড়িত রয়েছে বহু পৌরাণিক কাহিনী ও কিছু অজানা রহস্য। কেদারনাথ মন্দির এর সাথে জড়িত অজানা তথ্য ও রহস্য জানতে চাইলে আপনি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

1. কেদারনাথ মন্দিরটি ভগবান শিব দ্বারা সুরক্ষিত:

2013 সালের বর্ষা ,তীব্র বৃষ্টিতে যে বন্যা এবং ভূমিধসের সৃষ্টি হয় তার দ্বারা কেদারনাথের সমগ্র এলাকা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এমনকি সেই বছরের বন্যার কারণে অর্থাৎ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে সেই স্থানের বহু স্থানীয় এবং ভক্তরা মারা গিয়েছিল।আপনি এটা জেনে অবাক হবেন যে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও কেদারনাথ মন্দিরটি এমনভাবে অক্ষত ছিল যেন মনে হয় কোন ঐশ্বরিক শক্তি এটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করছে। প্রত্যক্ষদর্শী লোকেরা বলেছিলেন যে, একটি বিশাল পাথর মন্দিরের পিছনের অংশ কে আটকে রেখেছিল যার কারণেই জল এবং ধ্বংসাবশেষ তাদের গতিপথ পরিবর্তন করেছিল এবং কেদারনাথ মন্দির ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা হয়েছিল।

2. মন্দিরের পাহারায় রয়েছে ভৈরনাথ জি

বলা হয়ে থাকে যে কেদারনাথ মন্দির ভৈরনাথ জির মন্দির দ্বারা সর্বদা সুরক্ষিত থাকে । কারণ তিনি সেই মন্দিরের অভিভাবক। ভগবান ভৈরনাথ জি গাড়োয়াল অঞ্চলের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেবতা । তিনি সুরক্ষা এবং ন্যায় বিচারের প্রভু। তিনি ভগবান শিবের জ্বলন্ত অবতার এবং ধ্বংসের সাথে যুক্ত। ভৈরনাথ জি “ক্ষেত্রপাল” নামেও পরিচিত।ভৈরনাথ জির মন্দির কেদারনাথ মন্দিরের দক্ষিনে অবস্থিত। তিনি কেদারনাথ মন্দির কে খারাপ আত্মা বা শক্তি থেকে রক্ষা করে থাকেন।

3. কেদারনাথ মন্দির পঞ্চকেদার- এর একটি অংশ

কেদারনাথ মন্দির পঞ্চ কেদার এর একটি অংশ । পঞ্চ কেদার ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত পাঁচটি পবিত্র স্থান কে নির্দেশ করে যার সবকটি গাড়োয়াল হিমালয় এ অবস্থিত। শুধু তাই নয়, যারা পঞ্চকেদার তীর্থযাত্রায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাদের অবশ্যই এই ধামগুলি ক্রমানুসারে দেখতে হবে – তুঙ্গনাথ (যেখানে ভগবান শিবের হাত পড়েছিল), রুদ্রনাথ ( যেখানে ভগবান শিবের মুখ পড়েছিল), মধ্য মহেশ্বর (যেখানে ভগবান শিবের পেট পড়েছিল), এবং কল্পেশ্বর (যেখানে ভগবান শিবের তালা পড়ে ছিল)।

4. কেদারনাথের পুরোহিতগন

কেদারনাথ তীর্থ পুরোহিতদের প্রায়ই কেদারনাথের পান্ডা বা তীর্থ গুরু বলা হয় । কেদারনাথ তীর্থ পুরোহিতরাই বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান করেন এবং তার বিনিময়ে অর্থ সংগ্রহ করেন। তবে একটা কথা আপনার মনে রাখা উচিত তা হল- কেদারনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত, যাকে রাওয়াল বলা হয়, তিনি মন্দিরের অভ্যন্তরে কোন আচার-অনুষ্ঠান করেন না। তিনি তাঁর সহকারীদের এই দায়িত্ব অর্পণ করেন।

কেদারনাথের তীর্থ পুরোহিত অর্থাৎ পান্ডারা কেদারনাথ উপত্যাকায় প্রধানত তিনটি নির্দিষ্ট এলাকায় বাস করেন। যেগুলি হল- গুপ্তকাশীর বামসু এলাকা, গুপ্তকাশীর উত্তর এলাকা, উখিমঠ। এই পুরোহিতদের বিষয়ে সবচেয়ে মজার তথ্য হলো- এই পুরোহিতরা তাদের 360টি পুরোহিত পরিবারের আদি গোষ্ঠীর বংশধর বলে মনে করেন। তারা পুরোহিত, শুক্লা, শর্মা, কাটিয়াল, বাজপাই ইত্যাদি পরিবারের নাম বহন করেন। কেদারনাথ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রাওয়াল বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের অন্তর্গত।

আরও পড়ুন: ভক্তদের প্রবেশ অবাধ, মিলবে প্রসাদও! বছরের প্রথম দিনেই বড় উপহার বেলুড় মঠের

5.কেদারনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের তাৎপর্য

কেদারনাথ মন্দির, প্রায় 3583 মিটারের চিত্তাকর্ষক উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছে, এটি ভারতের সমস্ত জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই মন্দিরে নির্মাণ আরো অবিশ্বাস্য বলে মনে হয় যখন আমরা এই মন্দিরের উচ্চতা বিবেচনা করি।

কেদারনাথ হল ভগবান শিবের বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে সর্বোচ্চ। কেদারনাথ মন্দিরে পৌরাণিক কাহিনী পড়লে আমরা জানতে পারব যে, যখন ভগবান বিষ্ণুর অবতার নর-নারায়ন তপস্যা করছিলেন, তখন ভগবান শিব মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং তারা ভগবান শিবকে কেদারনাথে জ্যোতির্লিঙ্গ হিসেবে বসবাস করতে রাজি করেছিলেন, যাতে ভক্তরা শিবের আশীর্বাদ পেতে পারে।

6.পান্ডবদের প্ররোচনা

কথিত আছে যে, মহাভারতের যুদ্ধের পর পান্ডবরা তাদের আত্মীয়দের হত্যা করার জন্য দোষী বোধ করেছিলেন এবং তারা তাদের পাপ থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিল। এই কারণে তারা ভগবান শিবের কাছে তাদের পাপের ক্ষমা চেয়েছিল কিন্তু ভগবান শিব তাদের কাছ থেকে লুকিয়ে ছিলেন।

পাণ্ডবরা যখন কেদারনাথে পৌঁছায় তখন তারা ভগবান শিবকে খুঁজে পাইনি কারণ ভগবান শিব মাটিতে লুকিয়ে ছিলেন, কেবল তাঁর কুজটি মাটির উপরে দৃশ্যমান ছিল। যদিও পান্ডব পুত্র ভীম তার কুজের মাধ্যমে ভগবান শিবকে চিনতে পেরেছিলেন । তখন ভীম তার মহৎ শক্তি দিয়ে দুটি পর্বত কে ছিড়ে ফেলে ছিলেন এবং সেই মুহূর্তেই ভগবান শিব পান্ডবদের সামনে হাজির হয়ে তাদের পাপ ক্ষমা করেন । এইভাবে কেদারনাথের লিঙ্গ গঠিত হয়েছিল এবং একটি পর্বত পাথরের আকারে যা দেখতে পিরামিডের মতো।

7. জয় কেদার, জয়শ্রী কেদার

আপনি যখন কেদারনাথে পৌঁছবেন, তখন আপনি সর্বত্র একটি ধ্বনি শুনতে পারবেন যা হলো জয় কেদার জয়, শ্রী কেদার। আমরা সাধারণত হাই বা হ্যালো বলে একজন অপরজনকে সম্বোধন জানিয়ে থাকি। তবে কেদারনাথে তা হয়না, কেদারনাথে জয় কেদার, জয় শ্রী কেদার বলে একজন অন্যজনকে শুভেচ্ছা জানায়।

8. রুদ্র গুহা

রুদ্র গুহা কে সাধারনত ধ্যান কুটিয়া বলা হয়। এটি কেদারনাথ মন্দির এর কাছে অবস্থিত এবং এটি গাড়োয়াল মন্ডল বিকাশ নিগম(GMVN) দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এটা নির্মাণ করার পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো ধ্যান করার জন্য একটি নিরিবিলি স্থান তৈরি করা।

কেদারনাথ গুহায় ইন্টারনেট সংযোগ নেই, তবে এখানে একটি বিছানা এবং উপযুক্ত বিদ্যুৎসহ বাথরুম রয়েছে । আপনি হয়তো জানেন যে, 2019 সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই গুহায় ধ্যান করেছিলেন । সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, 2018 সালে এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো কেদারনাথের গুহাটি প্রি-বুক করা হয়েছিল। যত জন পর্যটক অগ্রিম বুক করেছেন তার সংখ্যা হল— সেপ্টেম্বরে 19টি এবং অক্টোবরে 10টি৷

Check Also

একসঙ্গে ফেসবুক এবং গুগলে কোটি টাকার চাকরি পেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিশাখ !! রইলো ভিডিও

কামাল করলেন বাংলার তরুণ। একই সঙ্গে ফেসবুক আর গুগল থেকে পেলেন মোটা বেতনের চাকরির প্রস্তাব। ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.