ছোট্ট শঙ্খের ওপর ফুটে উঠেছে মহাভারতের নানান কাহিনি। সূক্ষ্ম কারুকার্য দেখলে আপনি অবাক হতে বাধ্য। বাংলার প্রাচীনতম শিল্প গুলির মধ্যে শঙ্খ শিল্প বিপন্নের পথে। সেই পরিস্থিতিতে শঙ্খ শিল্পের জন্য জাতীয় পুরস্কার এনে দিয়েছে বাঁকুড়া জেলা। শৈল্পিক দক্ষতা এবং অসাধারণ হাতের কাজের জন্য বাঁকুড়া হয়ে উঠেছে বিখ্যাত।
বাঁকুড়া শিল্প
বাঁকুড়া জেলার ইন্দপুর ব্লকের একটি গ্রামের নাম হাটগ্রাম। এখানে শঙ্খ দিয়ে বহু জিনিস তৈরি হয়। শাখা এবং বাজাবার শঙ্খ ছাড়াও তৈরি হয় চুলের ক্লিপ, হার, ধূপদানি, কাজলদানি ও ঘর সাজানোর নানা জিনিস। হাটগ্রাম থেকেই সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে শঙ্খজাত নানা দ্রব্য। কিন্তু এবার এই গণ্ডিকে ছাড়িয়ে সামনে এল অন্য এক শিল্প। ছোট্ট শঙ্খের উপরেই মহাভারতের গল্প।
বিশেষ শিল্পী কে ?
বর্তমানে বাঁকুড়া জেলার মাথায় যিনি নতুন গর্বের মুকুট এনে দিয়েছেন তিনি হলেন বাবলু নন্দী। ২০১৮ সালে তিনি পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। তিনি আবার চলে এলেন শিরোনামে। ২০১৯ থেকেই তিনি শঙ্খের ওপর মহাভারতের বিখ্যাত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের ছবি আলাদা আলাদা করে খোদাই করেন। সেগুলি পাঠিয়ে দেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রকে। সম্প্রতি তিনি জাতীয় সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন পুনরায়।
শিল্পীর জীবনের ছোট্ট জীবন কথা
পুরুলিয়ার মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক উত্তীর্ণ হন। তারপরই জীবিকা হিসেবে বেছে নেন পারিবারিক শিল্প কার্যকেই। পারিবারিক শিল্প কার্য হওয়ার কারণে তার এই বিষয়ে জ্ঞান ও দক্ষতা দুটোই ছিল। তিনি শাখা তৈরি করেন না, যত আগ্রহ তাঁর শঙ্খের উপর কারুকার্য নিয়ে। খোদাই শিল্পের তালিম নিয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী সুবোধ দত্তের কাছ থেকে।
শঙ্খের ওপর শিল্পকলা
বাবলু নন্দীর অসাধারণ শৈল্পিক দক্ষতায় ফুটে ওঠে নানান পৌরাণিক গল্প। মাঝে মাঝে কখনো বা বিশেষ মনীষীদের চিত্র ফুটে উঠতে দেখা গেছে। চিত্র গুলির মধ্যে আছে কর্ণের রথের চাকার মেদিনীগ্রাস, কৃষ্ণ অর্জুনের রথ যাত্রা, ভীম দুর্যোধনের গদাযুদ্ধ, অশ্বথামা বধ ইত্যাদি। পুরুলিয়া জেলা তথা বাংলার গর্ব বলা যেতে পারে বাবলু নন্দীকে। তাঁর সূক্ষ্ম কারুকার্য করা বিশেষ শিল্প, বাংলার বিভিন্ন প্রদর্শনীতে প্রথম সারিতে অবস্থান করছে।