স্বয়ং দেবাদিদেব শিবকে পর্যন্ত করতে হয়েছিল ভুলের প্রায়শ্চিত্ত ? অবাক হওয়ার বিষয় হলেও পুরাণকাহিনী অনুযায়ী তা সত্য। ভগবান শিব হলেন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সংহারকর্তা এবং সমস্ত শক্তির আধার। কিন্তু তিনি করে বসলেন ব্রহ্মা হত্যার পাপ। তার জন্যই কি করতে হলো প্রায়শ্চিত্ত ? এ যেন এক উলট পুরাণ।
ব্রহ্মাদেবের পঞ্চম মাথা
পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী, ব্রহ্মা দেবের পাঁচটি মাথা ছিল। চারটি মাথা চারদিকে এবং পঞ্চম মাথাটি ছিল চারটি মাথার উপরে। ব্রহ্মদেব তাঁর চারটি মাথার মুখ দিয়ে সবসময় শাস্ত্র বাক্য এবং ভাল গুণের কথা উচ্চারণ করতেন। কিন্তু অপর পঞ্চম মাথার মুখ দিয়ে সর্বদা করতেন অন্যের নিন্দামন্দ। অপ্রিয় কথা শোনাতেন সবাইকে।
ব্রহ্মা কর্তৃক শিবের অসম্মান
একদিন দেবাদিদেব শিবকে ব্রহ্মাদেব তাঁর পঞ্চম মাথার মুখ দিয়ে নানান নিন্দা মন্দ করতে থাকেন। বারংবার দেবাদিদেবকে অসম্মান করেন। অবশেষে ব্রহ্মা দেবের অপ্রিয় বাক্যে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন দেবাদিদেব। কিন্তু সেদিকে কোন খেয়াল ছিলনা ব্রহ্মাদেবের। তিনি অনবরত মহাদেবকে উপহাস এবং বিদ্রূপ করেন। অবশেষে মহাদেব রেগে গিয়ে বিনাশকারী রুদ্রের রূপ ধারণ করেন এবং কেটে ফেলেন ব্রহ্মা দেবের পঞ্চম মাথা।
দেবাদিদেবের প্রায়শ্চিত্ত
ব্রহ্মা দেবের পঞ্চম মাথার করোটি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দেবাদিদেবের হাতে আটকে যায়। কিছুতেই তা তিনি হাত থেকে মুক্ত করতে পারছিলেন না। অবশেষে দেবাদিদেব শরণাপন্ন হন বিষ্ণুদেবের কাছে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিষ্ণুদেবের উপদেশের শুরু করেন কঠোর তপস্যা। শুরু করেন ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করা । এই প্রায়শ্চিত্ত করেছিলেন বারাণসীর গঙ্গারতীরে। দীর্ঘ কঠোর তপস্যা এবং ত্যাগের পরে দেবাদিদেব তুষ্ট করতে পারেন বিষ্ণুদেবকে। অবশেষে বিষ্ণু দেবের আশীর্বাদে পঞ্চম মাথার করোটি দেবাদিদেবের হাত থেকে খসে পড়ে এবং তিনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পান।