Friday , March 31 2023

বয়স মাত্র ১৪ বছর! শত বাধা পেরিয়ে সম্পূর্ন নিজের প্রচেষ্টায় দাঁড় করিয়েছেন ১০০ কোটি টাকার সফল ব্যাবসা! রইলো তিলক মেহেতার সফলতার কাহিনী

সাফল্যের কোনো বয়স হয়না। ধৈর্য্য, পরিশ্রম করা মানসিকতা এবং লক্ষ্য ঠিক থাকলে সাফল্য ঠিক সামনে এসে ধরা দেয়।কিন্তু মুম্বাইতে বসবাসকারী তিলক মেহতা এমন এক অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়েছেন, যিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সে কোটি টাকার ব্যবসা শুরু করে সবাইকে,রীতিমত চমকে দিয়েছেন। তিলক মেহতা অন্য কারো সাহায্য ছাড়াই নিজ বুদ্ধি ও মেধা খাটিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল কুরিয়ার,সার্ভিস পেপার এন পার্সেল। তিলক নিজেই এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং উদ্যোক্তা।

পার্সেল পরিষেবার জন্য একটি ডিজিটাল ক্রিয়া সংস্থা তৈরি করেন এই মেধাবী বালক এর মাধ্যমে স্কুল থেকে তিলক এখন বিখ্যাত বিজনেস খ্যাতি অর্জন করেছেন এত অল্প বয়সী সফল উদ্যোক্তা পুরো বিশ্বের দৃষ্টান্ত স্থান অধিকার করেছেন। তিলক ভারতের মুম্বাইয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করে। তার বাবা মহেশ মেহতা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তার মা কাজল মেহতা একজন গৃহিণী। তিলকের জমজ দুই বোন আছে। বর্তমানে তিলক গারোদিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তিলক কখনোই ভাবতে পারেনি এতো অল্প বয়সেই সে উদ্যোক্ত বনে যেতে পারবে। তার মতে, ‘চোখ-কান খোলা রাখলে শিশুরাও অনেক কিছু জানতে, শিখতে ও করতে পারে।’ একদিন তিলকের কয়েকটি বইয়ের খুবই প্রয়োজন ছিলো। তার বাবা মহেশ মেহতা অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকায়, ছেলের দরকারি বইগুলো আনতে ভুলে যান।

এর পরের দিন তিলক তার বাবাকে জানায়, অনলাইনে বই অর্ডার করে দিলে দ্রুত পাওয়া যেতো। তিলক ২০১৮ সালে ‘পেপারস এন পার্সেল’ নামক একটি স্টার্টআপ গড়ে তোলে। ‘মুম্বাই ডাব্বাওয়ালা’ দের সহযোগিতায় একদিনেই পণ্য ডেলিভারি দেওয়ার প্রয়াসে শুরু করে ডিজিটাল কুরিয়ার সার্ভিস। কলম থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সামগ্রীই পেপার্স এন পার্সেল পৌঁজে দেয় ক্রেতার বাড়িতে। এর মাধ্যমেই মাত্র দুই বছরের মধ্যেই কোটিপতি হয়ে গেছে তিলক। তিলক পেপারস অ্যান্ড পার্সেল নামে একটি লজিস্টিক কোম্পানি শুরু করে। যেই বয়সে অন্যান্যরা শুধুমাত্র খেলাধুলা এবং স্কুলে পড়াশোনা করে, সেই বয়সেই তিলক বড় লক্ষ্য স্থির করে কোটি কোটি টাকা উপার্জনের চিন্তা শুরু করে। এমতাবস্থায়, লজিস্টিক মার্কেটে তাদের শেয়ার ২০% বেড়ে যায় এবং ব্যবসাও বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, এরপর তিলক ঘনশ্যাম পারেখ নামের এক ব্যাঙ্ক অফিসারকে এই স্টার্টআপ শুরু করার বিষয়ে জানানো মাত্রই তিনি চাকরি ছেড়ে তিলকের সাথে যোগ দেন এবং কোম্পানিতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে কাজ শুরু করেন।

তিলকের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান ‘পেপারস এন পার্সেল’ একটি জরুরি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। এতে যুক্ত আছেন ২০০ জনেরও বেশি কর্মচারী। এ ছাড়াও ৩০০ জনেরও বেশি ডাব্বাওয়ালা এই অ্যাপের মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে খাবার সরবসরাহ করে থাকেন।তিলক জানান, ‘প্রতিদিন প্রায় ১২০০ পার্সেল বিতরণ করা হয় এই অ্যাপের মাধ্যমে। পেপারস এন পার্সেল আমার স্বপ্ন। এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য হলো- একদিনের মধ্যেই পুরো মুম্বাইয়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দেওয়া। এর পরিধি ও ব্যাপ্তি আরও বাড়ানোর প্রয়াসে আমি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করব।’ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় মুম্বাই এর মতো শহরে কাজ টা কিভাবে করবে। এমন সময় মাথায় আসে ডাব্বাওয়ালাদের কথা। মুম্বাই তে প্রতিদিন বাড়িতে, অফিসে সহ বিভিন্ন জায়গায় খাবার ডেলিভারি করে যারা তাদের বলা হয় ডাব্বাওয়ালা। আর তাই এই কাজের জন্য তাদের কেই বেছে নেন তিলক মেহেতা।

এরপর শুরু হয় তার জার্নি। পড়াশোনার পাশাপাশি সে ব্যবসার বিভিন্ন পরিকল্পনা করতে থাকে এবং আঙ্কেল এর সহযোগিতায় পরিকল্পনা গুলো বাস্তবায়ন করতে থাকে। একদিনে মুম্বাই এর মধ্যে যেকোনো জায়গায় পার্সেল পাঠানোর বিষয় টি সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় এবং খুব শীঘ্রই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে পেপার এন্ড পার্সেল। এক বছরের মধ্যে দাঁড়িয়ে যায় পেপার এন্ড পার্সেল। আর এখন এটি মুম্বাই এর খুব জনপ্রিয় একটি কুরিয়ার কোম্পানি। তিন কেজি পর্যন্ত পার্সেল পাঠিয়ে থাকে মুম্বাই শহর ও শহরতলীতে। ওজন অনুযায়ী চার্জ ৪৫ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত। তার কোম্পানিতে বর্তমানে কাজ করছে ৫০০ কর্মচারী এবং ৩০০ ডাব্বাওয়ালা। তারা প্রতিদিন ১২০০ ডেলিভারি সম্পন্ন করে। এই কোম্পানির সাথে কাজ করে ডাব্বাওয়ালারা মাসে ১০০০০ টাকা উপরি আয় করে। এখন তিলক মেহেতা ১৪ বছরের একজন সফল ব্যবসায়ী। সম্প্রতি এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে ফেসবুকের The Bong Untold নামের একাউন্ট থেকে। বর্তমানে ভিডিওটি দেখেছেন ৪৩ লক্ষ্য মানুষ আর লাইক করেছেন ৭৯ হাজার মানুষ। ১১ হাজার মানুষ বর্তমানে ভিডিওটিকে চারিদিকে শেয়ার করেছেন আর কমেন্ট করেছেন ৭৯৮ জন মানুষ।

Share

Check Also

অল্প বয়স থেকেই স্বাবলম্বী হতে চান ? ছাত্রদের জন্য রইল চমৎকার কিছু আইডিয়া

ছাত্রজীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল পড়াশোনা। বাবা-মা সব সময় চান যাতে তাদের সন্তানরা এই ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.