প্রথম থেকেই পরিবারে অর্থনৈতিক টানাপোড়েন। অন্যদিকে চোখে বিরাট স্বপ্নের জাল বুনছিলেন এক যুবক। কিন্তু সংসারের হাল ধরতে কিছু তো করতে হবে! তাই বাধ্য হয়ে শুরু হল লড়াই। একসময় OLA-Uber ক্যাব চালক হয়ে কাজ করেছেন। করেছেন জোমাটো, সুইগির ডেলিভারি বয়ের কাজও। আবার Rapido বাইকচালক হিসেবেও নিয়োজিত ছিলেন তিনি। কিন্তু স্বপ্ন যে অনেক বড়! সংসারে যতই চাপ না কেন, সেই লক্ষ্য থেকে কোনওদিনই বিচ্যুত হননি তিনি।
অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ। এতদিনের লড়াইয়ের পর বেঙ্গালুরুর একটি বহুজাতিক সংস্থায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি পেলেন শাইক আবদুল সাথার। তিনি অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের বাসিন্দা। তাঁর এই স্বপ্নপূরণের কাহিনী সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। তিনি LinkedIn-এ তাঁর এই কঠিন জীবন সংগ্রাম ও সেখান থেকে স্বপ্নের চাকরি পাওয়ার পুরো জার্নিটার কথা তুলে ধরেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তা মন ছুঁয়ে নিয়েছে নেটিজেনদের।
কলেজে পড়ার সময় থেকেই তিনি উপার্জন করতে শুরু করেন। নিজের পকেট মানি চালানোর পাশাপাশি সংসারের পাশেও দাঁড়ান তিনি। এরপর থেকে কখনও ক্যাব চালক আবার কখনও ফুড ডেলিভারি বয়ের ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন জোরকদমে।
অবশেষে তাঁর কঠিন পরিশ্রমের ফল মিলল। সম্প্রতি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তিনি বেঙ্গালুরুর একটি বহুজাতিক সংস্থায় যোগ দিয়েছেন। স্বপ্নের চাকরি পেয়ে উচ্ছ্বসিত আবদুল। নিজের পড়াশোনার খরচ, হাতখরচ এবং সংসারের খরচ চালাতে যাকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ফুড ডেলিভারি বয়ের কাজ করতে হত, আজ নিজের স্বপ্নের চাকরি পেয়ে আর সেই কষ্ট তাঁকে করতে হবে না। এবার থেকে সংসারেও আসবে স্বাচ্ছন্দ।
চাকরি পাওয়ার পরই সর্বপ্রথম বাবার ঋণ শোধ করতে উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর বাবা একজন কন্ট্রাক্ট কর্মী। তাই সংসারে আর্থিক অনটন লেগেই থাকত। ছোট থেকে অনেক সংগ্রাম করে বড় হতে হয়েছে আবদুলকে। কিন্তু সব কিছুর মাঝেও নিজের পড়াশুনার ক্ষতি করেননি তিনি। বরাবরই চেয়েছিলেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আর্থিক দিক থেকে স্বাবলম্বী হতে। কারণ বাবা মার বয়স হওয়ার পর থেকে সংসারের হাল ধরতে তিনিই একমাত্র ভরসা। তিনি জানিয়েছেন কয়েক মাসের বেতনের টাকা দিয়ে তিনি তাঁর বাবার যাবতীয় ঋণ শোধ করবেন।