Tuesday , March 21 2023

পাকিস্তানের এই কালী মন্দির ১৫০০ বছরেও স্পর্শ করতে পারেনি মৌলবাদীরা…ভয় পায় তারা ! জানেন কেন?

বিগত দেড় হাজারের বেশি সময় ধরে এক কালী মন্দির মাথা তুলে দাঁড়িয়ে, যার সামনে মাথা ঝুঁকিয়েছে স্বয়ং পাকিস্তানও। হ্যাঁ মৌলবাদের রমরমা পাকিস্তানেই। ওই দেশে বহু হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রীষ্টীয় সৌধ, মন্দির বা উপানসাগৃহ ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের মৌলবাদীরা। তবুও বালুচিস্তানের কালাট অঞ্চলে কালাটেশ্বরী কালী মন্দির আজও স্বমহিমায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। এখানে দেবীর উগ্র রণচণ্ডী মূর্তি দেখে মন্দিরের গায়ে হাত দেওয়ার সাহস দেখায়নি কট্টর মৌলবাদীরাও। সদা ক্রোধান্বিতা, রণচণ্ডিনী, করাল-বদনা দেবী এখানে পূজিতা হন কালাট কালীমাতা বা কালাটেশ্বরী মা কালী রূপে।

পাকিস্তানে যে কয়েকটি হিন্দু মন্দির টিকে আছে
তাঁদের মধ্যে অন্যতম একান্ন সতীপীঠের অন্যতম মরুতীর্থ হিংলাজ বা বিবি নৈনির মন্দির। তবে বালুচিস্তানের এই কালাট কালীমাতার মন্দির কিছুটা আড়ালেই থেকে গিয়েছে। মন্দিরের প্রাচীনত্ব দেড় হাজার বছরের বেশি। সেই ৭৪ খ্রীষ্টাব্দে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা। আজও মন্দিরের গায়ে উর্দু ফলকে তা জ্বলজ্বল করছে। ঐতিহাসিকদের দাবি, যখন পাকিস্তান বা বালুচিস্তানের জন্ম হয়নি বা এশিয়ার এই অঞ্চলে ইসলামের বিস্তার হয়নি তখন বহু হিন্দু দেবদেবীর মন্দির ছিল।

পরে ইসলামের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে সেই মন্দিরের সিংহভাগই ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বা জবর দখল করে বসতবাড়ি, হোটেল বা পাঠাগাড় তৈরি করেছে মৌলবাদীরা। কিন্তু বালুচিস্তানের এই কালাট কালীমাতার মন্দির স্পর্শ করতে পারেনি। জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় ‘খান’ যুবরাজেরা কালাট রাজ্যটিকে ভারতভুক্তির দাবি জানিয়ে জওহরলাল নেহেরুকে চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে নেহেরু নাকচ করে দিয়েছিলেন প্রস্তাবটি।

জানা যায়, এই মন্দির ধ্বংসের বহু চেষ্টা করেছে
মৌলবাদীরা। কিন্তু কোনও বারই তা সফল হয় না। ২০১০ সালে মৌলবাদীরা অপহরণ করেছিল মন্দিরের প্রধান পুরোহিত লক্ষীচাঁদ গড়জী ও মা কালাটেশ্বরীর দুই সেবককে। কিন্তু কয়েকদিন পরে জীবিত অবস্থায় ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। যা ছিল রীতিমতো বিস্ময়কর ব্যপার। স্থানীয় মুসলিমরাও এই মন্দিরকে নিজের বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন। মন্দিরের ভেতরে আছে মা কালাটেশ্বরীর প্রায় কুড়িফুট উঁচু বিগ্রহ।

ভক্তদের আতিশয্য থেকে বিগ্রহকে আলাদা রাখার জন্য বিগ্রহটি কাচ দিয়ে ঘিরে রাখা আছে। মা কালী এখানে দশভূজা। দশটি হাতে তিনি ধরে রয়েছেন গদা, তরবারি, ঢাল, শঙ্খ, খড়গ, ত্রিশুল, চক্র, ধনুক, নরমুন্ড ও খঞ্জর। রণ সাজে সজ্জিতা কালীমাতা এখানে নীলবর্ণা, গলায় ঝুলছে আসল নর করোটির মালা। বিরাট জিভ বার করে মা কালাটেশ্বরী দাঁড়িয়ে আছেন মহাদেবের বুকে। মূল বিগ্রহের সামনে বুলেটপ্রুফ কাঁচের ঘেরাটোপ। যদিও এই রণচণ্ডী মূর্তি অন্য কোনও মন্দিরে দেখা যায় না বলেই দাবি ঐতিহাসিকদের।

Check Also

ডিসেম্বরেই শুরু হচ্ছে মল মাস, এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না

Malmaas 2022: হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী প্রত্যেকটি শুভ কাজ করার জন্য কিছু শুভক্ষণ বা মুহূর্ত থাকে। এমনও ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.