প্রত্যেকেরই ঘুমের ধরণ আলাদা। কেউ কাত হয়ে ঘুমাতে পছন্দ করেন, তো কেউ চিৎ হয়ে। আবার কেউ কেউ উপুর হয়েও ঘুমিয়ে আরাম পান। অন্যদিকে, কেউ নরম বিছানায় ঘুমাতে ভালোবাসেন, আবার কেউ শক্ত বিছানায় ঘুমাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
জানলে অবাক হবেন যে, আমরা জীবনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সময় ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেই। অথচ আমাদের অনেকেই জানি না ঘুমানোর সেরা অবস্থান কোনটি? চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-
ঘুম শরীরে যেসব প্রভাব ফেলে
আপনার শরীর এবং মনের জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের মধ্য দিয়ে মুলত আপনি নিজেকে রিচার্জ করেন। এ জন্য ঘুমের অভাবে আপনার স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ঘুম মানুষের স্মৃতিশক্তি, একাগ্রতা, অভিব্যক্তি প্রকাশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, আবেগ এবং শারীরিক সুস্থতাকে প্রভাবিত করে। শুধু তাই নয়, ঘুমের অবস্থানও শরীরে ওপর ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
কত ঘন্টা ঘুমাবেন
প্রতি রাতে কমপক্ষে ছয় ঘন্টা ঘুমানো দরকার। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ছয় ঘণ্টার কম ঘুমানো শরীরের জন্য ঘুমহীন রাত পার করার মতোই প্রভাব ফেলে। দুই একদিন হয়তো কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে টানা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত যদি সেটি নিয়মিত হয়ে পড়ে তাহলে আপনার মন এবং শরীরে তা একটি পার্থক্য তৈরি করবেই। অনেকেই মনে করেন, একটি রুক্ষ রাতের পরও স্বাভাবিক কাজ করা যায়। কিন্তু তা আসলে ঘটে না।
ঘুমানোর অবস্থান
সব মানুষকে মোটামুটি তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়- যারা পেটের ওপর ঘুমায়, যারা পিঠের ওপর ঘুমায় এবং যারা কাত হয়ে ঘুমায়। ঘুমের বিশেষ কোনো একটি অবস্থান যেমন মন এবং শরীরের জন্য ভালো ফল বয়ে আনতে পারে, তেমনি কোনো অবস্থান আবার অসুস্থতাও তৈরি করতে পারে।
উপুড় হয়ে ঘুমানো
উপুড় হয়ে বা পেট পেতে ঘুমানো সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর। মাথা উল্টো দিকে থাকার কারণে ঘাড়ে ও পিঠে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া ভরা পেটে এই অবস্থানে ঘুমাতে গেলে ঘুমে মারাত্মক ব্যঘাত ঘটে।
কাত হয়ে ঘুমানো
কাত হয়ে ঘুমানো, ঘুমের সবচেয়ে সাধারণ অবস্থান। কাত হয়ে ঘুমানোর ফলে বাহুতে এবং পায়ে ব্যথা তৈরি হতে পারে। ডান কাত হয়ে ঘুমালে হজমে সমস্যা হয় এবং বুকজ্বালা রোগ বাড়ে। তবে এই অবস্থানটির ভালো দিক হলো শরীরের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং নাক ডাকা কমায়।
পিঠের ওপর ঘুমানো
যারা পিঠের ওপর তথা চিৎ হয়ে শুয়ে ঘুমান তারা ভাগ্যবান, কারণ এটি ঘুমানোর সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর অবস্থান! চিৎ হয়ে শুয়ে ঘুমানো মেরুদণ্ডের জন্য ভালো। এই অবস্থানটি শরীরের পেছনে এবং ঘাড়ের পেশীতে খুব কম চাপ তৈরি করে। তাছাড়া এই অবস্থানটি ত্বকের জন্যও সবচেয়ে উপকারী। যারা কাত হয়ে বা পেটের ওপর তথা উপুড় হয়ে শুয়ে ঘুমান তাদের মুখে দ্রুত বলিরেখা ও দাগ তৈরি হয়। চিৎ হয়ে শুয়ে ঘুমালে এই সমস্যা হবে না। এই অবস্থানটি নারীদের জন্যও ভালো, কারণ এই অবস্থানে বুকের কুঁচকির পাশাপাশি স্তন ঝুলে যাওয়াও রোধ করে। একমাত্র অসুবিধা হলো এই অবস্থানটি নাক ডাকাকে আরও বিশ্রী করে তোলে।