বাংলা ১২২৯ সনের ( ১৮৮৮ খ্রীষ্টাব্দ ) ১ বৈশাখ এই প্রসন্নময়ী কালীমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে মুখোপাধ্যায় বংশের প্রত্যেক পুরুষের নামের সঙ্গে ‘প্রসন্ন’ শব্দ যুক্ত করা হয়।
পূর্বে নদিয়া জেলা, পরবর্তী কালে যশোহর জেলা ও বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগণার গোবরডাঙ্গার জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠা করেন খেলারাম মুখোপাধ্যায়। তাঁর দুই বিবাহ। প্রথমা স্ত্রী যশোহর জেলার ক্ষেত্রপাড়া গ্রামের আনন্দময়ী দেবীর গর্ভে জন্মলাভ করেন বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়। বৈদ্যনাথ বাবু নিঃসন্তান অবস্থায় ১৮২২ সালে পরলোক গমন করেন। খেলারাম মুখোপাধ্যায়ের দ্বিতীয়া স্ত্রী নদিয়া জেলার ধর্মদহ গ্রামের দ্রৌপদী দেবীর গর্ভে কোন পুত্রসন্তান না হওয়ায় তিনি খুবই মনঃকষ্টে ছিলেন। সেই সময় এক সন্ন্যাসী এসে তাঁকে কালীমাতার (Kali Puja 2021) একটি ফল,দৈব,ওষুধ হিসাবে ধারণ করতে বলেন। ওই ওষুধ ধারণের ফলে দ্রৌপদী দেবীর ১৭৯৪ সালে একটি পুত্রসন্তান লাভ করেন। কালী মাতা প্রসন্ন হয়ে এই পুত্রসন্তান দেওয়ায় সেই পুত্রের নাম রাখা হয় কালীপ্রসন্ন।
কালীমাতার প্রসাদে পুত্রসন্তান লাভ করায় খেলারাম মুখোপাধ্যায় এই কালীমূর্তি ও তৎসহ কালীমন্দির স্থাপনে উদ্যোগী হন। কিন্তু মন্দির নির্মাণ কার্য শেষ হওয়ার আগেই খেলারামের মৃত্যু হলে কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় মন্দির নির্মাণ কার্য শেষ করেন। বাংলা ১২২৯ সনের ( ১৮৮৮ খ্রীষ্টাব্দ ) ১ বৈশাখ এই প্রসন্নময়ী কালীমন্দির (Kali Puja 2021) প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে মুখোপাধ্যায় বংশের প্রত্যেক পুরুষের নামের সঙ্গে ‘প্রসন্ন’ শব্দ যুক্ত করা হয়। উঁচু ভিত্তিবেদির উপর প্রতিষ্ঠিত, দক্ষিণমুখী মন্দিরটি একটি দালান। সামনে রোয়াক। গর্ভগৃহে শ্বেত পাথরের বেদির উপর শায়িত শিবের উপর দণ্ডায়মানা প্রায় ২.৫ ফুট উঁচু কষ্টি পাথরের সুন্দর কালিকা মূর্তি প্রতিষ্ঠিত। শায়িত শিব শ্বেত পাথরে নির্মিত। দেবী নানারূপ সোনা-রুপোর অলংকারে ভূষিতা। উৎসব উপলক্ষ্যে আশেপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক লোকের সমাগম হয়। শনি-মঙ্গলবারে অনেকে মানসিক-পূজাও দিয়ে থাকেন।
প্রতিবছরের মতো এ রীতি অনুযায়ী কালীপুজো (Kali Puja 2021) সম্পন্ন হয় এই মন্দিরে। নিউ মিনিং তবে করোনাকালে কিছু বাধ্যবাধকতা থাকায় নিয়ম বদলেছে। এদিন এলাকার প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ লোককে কালী মায়ের ভোগ বিতরণ করা হয়। আগে পাঠা বলি দিয়ে সুচনা হত এই কালীপুজোর কিন্তু এখন তা বন্ধ। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই কালীপ্রসন্ন মুভি মায়ের মন্দিরের পুজো দেখতে ভিড় করেন বহু মানুষেরা। স্থানীয় মানুষদের কোথায় বহু প্রচলিত এই পুজো এবং অনেকটাই জাগ্রত বলে জানা যায়। জমিদার বংশের এই প্রজন্মের পরিবারের সদস্যরা পুজোর দিনে সময় করে উপস্থিত থাকে। গোবরডাঙ্গা এলাকাবাসীর ঐতিহ্য গোবরডাঙ্গা প্রসন্নময়ী কালীমন্দির তথা গোবরডাঙ্গার রাজবাড়ী। আগামী দিনেও এভাবেই চলবে মায়ের আরাধনা এমনই মত পরিবারের সদস্যদের।