Thursday , March 30 2023

কালীকথাঃ দেবী সৃষ্টি ও সৌভাগ্যের প্রতীক, জানুন কলকাতার ৫ জাগ্রত কালীমন্দিরের ইতিহাস

দেবী কালিকা। একদিকে ভয়াল মূর্তি অন্যদিকে শান্ত রুপ। মহাদেবের বুকের ওপরে দাঁড়ানো বিবসনা এলোকেশী ও মুণ্ডমালিনী কালো বা শ্যামবর্ণের নারীমূর্তি।
দেবীর চার হাত। এক হাতে খড়্গ, এক হাতে রক্তঝরা মানুষের মাথা, অন্য দু’হাতের একটি অভয় দান ও অপরটি বরদানের। কালিকার এই মূর্তি যেমন একদিকে ধ্বংস ও অশুভনাশের প্রতীক, তেমনই অন্যদিকে সৃষ্টি ও সৌভাগ্যের দেবীরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে তাঁকে।
তন্ত্রে কালী দশমহাবিদ্যার তালিকায় প্রথম। বিভিন্ন তান্ত্রিক রচনা থেকে জানা যায় যে, তান্ত্রিক মতে তাঁর সাধনা করলে সব কামনা পূর্ণ হয় ও সমৃদ্ধি লাভ করা যায়।
খাস কলকাতার বুকে এমন জাগ্রত পাঁচটি কালী মন্দির রয়েছে যেখানে মন থেকে মায়ের আরাধনা করে পুজো দিলে ফল মিলতে বাধ্য।

1) কালীঘাটের কালী
কালীঘাটে দেবীর চারটি আঙ্গুল পড়েছিল।
বলা হয় কাশীর মতো পুন্যক্ষেত্র হলো কালীঘাট।
প্রায় ২০০ বছরেরও বেশী পুরোনো এই মন্দির।
মনসা মঙ্গল কাব্যেও এই প্রাচীন মন্দিরের উল্লেখ আছে।
বলা হয়ে থাকে যশোহরের রাজা প্রতাপাদিত্যের খুল্লতাত শ্রী বসন্ত রায় একটি ছোট মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।
সেই সময় দেবীর সেবায়েত ছিলেন ভুবনেশ্বর ব্রহ্মচারী। তিনি ছিলেন অপুত্রক।
তাঁর দৌহিত্র হালদাররাই বর্তমানে কালীঘাটের বিখ্যাত বংশ।
এই কালীঘাটের মূল পুজো আটটি।
এখানের অভিনবত্ব এটাই যে কালীপুজোর রাতে দেবীকে লক্ষ্মী রূপে এখানে পুজো করা হয়।

২) দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণী-
এই মন্দির সম্পর্কে কথিত আছে একবার কাশী যাত্রার আগেরদিন ভোররাতে জানবাজারের রানী মা স্বপ্নে দেখা পেয়েছিলেন মা জগদম্বার।
“কাশী যাওয়ার দরকার নেই। গঙ্গাতীরে একটি নয়নাভিরাম মন্দিরে আমার মূর্তি প্রতিষ্ঠা কর…” এই স্বপ্নাদেশ পেয়ে গঙ্গার পূর্ববর্তী তীরে মন্দির স্থাপন করা হয়।
১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ৩১মে স্নানযাত্রার দিন কলকাতা থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে ভাগীরথীর তীরে গড়ে তুলেছিলেন এই মন্দির।
মায়ের কাছে গিয়ে সব কষ্ট ঝেড়ে ভক্তিভরে মা-কে ডাকুন। মা ফেরান না।

3) ঠনঠনিয়ার সিদ্ধেশ্বরী কালী –
বহু যুগ আগে এই মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল ।
উদনারায়ন ব্রহ্মচারী নামে এক তান্ত্রিক আনুমানিক ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে মাটি দিয়ে সিদ্ধেশ্বরী রূপের কালীমূর্তি গড়েন।
১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে সেই জঙ্গলাকীর্ণ জায়গায় শংকর ঘোষ নামে এক ধনী ব্যক্তি কালীমন্দিরে আটচালা মন্দির নির্মাণ করে পুজোর ভারও নিজের কাঁধে নিয়ে নেন।
এখানে আদি কালী ছাড়াও জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিনী ও মাঘ মাসে রটন্তী কালী পূজা হয়।

4) সিদ্ধেশ্বরী বামা কালী-
আজকের বেহালা অতীতে সুন্দরবনের অংশ ছিল।
কথিত আছে লক্ষিন্দরের স্ত্রী দেবী বহুলার নাম থেকে জায়গার নাম হয় বেহালা।
বেহুলা দেবী কালীর আরেক রূপ।
এই জায়গার জাগ্রত কালিবাড়ি হলো সিদ্ধেশ্বরী মন্দির।
আড়াইশো বছর আগে বরিশায় স্থাপিত হয় এই মন্দির।

5) কাশিপুর আদি চিত্তেশ্বরী দুর্গা –
চিত্রেশ্বর রায় ছিলেন একজন ডাকাত।
ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে তিনি ষোড়শোপচারে দেবীর পুজো করতেন।
কথিত রয়েছে প্রায় ৫০০ বছর আগে এই দেবী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
দেবীর নামে এই জায়গাটির নাম হয়ে উঠেছে চিতপুর।
এই দেবী নিমকাঠ দিয়ে তৈরি।
জমিদার গোবিন্দরাম মিত্র মন্দিরটি পুনঃনির্মান করেছিলেন।

Check Also

ডিসেম্বরেই শুরু হচ্ছে মল মাস, এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না

Malmaas 2022: হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী প্রত্যেকটি শুভ কাজ করার জন্য কিছু শুভক্ষণ বা মুহূর্ত থাকে। এমনও ...

Leave a Reply

Your email address will not be published.