সুলতান পত্রিকা বেচে সকালে, বিকেলে ফল বিক্রি করে; মাঝের সময়টাতে চায়ের দোকানে বয়ের কাজ করে। অসুস্থ বাবা-মায়ের ঔষধ থেকে শুরু করে সকাল-বিকালের খাবার নিশ্চিত করতে অমানুষিক শ্রম দিয়ে যায়। এরমাঝেও সে স্কুলে যায়। নয়টা বাজলে ভালো কাপড় পরে বইখাতা নিয়ে হাজিরা দেয় বিদ্যানন্দের প্রথম শ্রেণিতে।
শুধু সুলতান নয়, এমন হাজার মুসলিম দরিদ্র শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার স্বপ্ন পূরণ করছে বিদ্যানন্দে আসা যাকাত ফান্ড।সুলতান সম্পর্কে এমনটা জানাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ। সংগঠনটির ফেসবুক পোস্টে এমন তথ্য জানানো হয়।সুলতানকে খুব মনোযোগী ছাত্র উল্লেখ করে বিদ্যানন্দ জানাচ্ছে তাকে ❛সুপারম্যান❜ হিসেবে আখ্যা দেওয়ার কথা কথা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, বিদ্যানন্দ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আনন্দের মাধ্যমে শেখা, এ মূলমন্ত্র থেকেই ❛বিদ্যানন্দ❜ নামের সৃষ্টি। পড়বো, খেলবো, শিখবো এ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১৩ সালের ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের প্রত্যন্ত এক গ্রাম থেকে বিদ্যানন্দের কার্যক্রম শুরু হয়। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে পরবর্তীতে আরও নানামুখী উদ্ভাবনী প্রকল্প পরিচালনার মধ্য দিয়ে বিদ্যানন্দ আজ দেশে-বিদেশে আলোচিত ও অনুকরণীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে পরিচিত হয়েছে। বিদ্যানন্দের লক্ষ্য সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে ত্যাগ ও মেধাভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
কতো হবে ছেলেটার বয়স? বড় জোর সাত কি আট। ওর নাম সুলতান। এই বয়সেই সে করে তিনটি চাকরি। সুলতান সকালে পত্রিকা বিক্রি , বিকেলে ফল বিক্রি আর মাঝের সময়টাতে চায়ের দোকানে বয়ের কাজ করে এটাই তার প্রতিদিনকার রুটিন।
সুলতানের ছোট এই মাথার উপর অনেক দায়িত্ব অসুস্থ বাবা-মায়ের ঔষধ ক্রয়, পারিবারিক খরচ থেকে শুরু করে সকাল-বিকালের খাবার নিশ্চিত করতে অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয় সুলতানের। এতসব কাজের মাঝেও সে প্রতিদিন স্কুলে যায়। সকাল নয়টা বাজার সাথে সাথে শুরু হয় তার স্কুল যাওয়ার প্রস্তুতি।
একটু ভালো কাপড় আর বইখাতা নিয়ে ছুটে চলে স্কুলে। সুলতান বিদ্যানন্দের একটি স্কুলের প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। সুলতানের পড়াশোনার খরচ চলায় বিদ্যানন্দে আসা যাকাত ফান্ড। বিদ্যানন্দ স্কুলে সুলতান সুপারম্যান নামে পরিচিত। খুব মনোযোগী ছাত্র সে।শুধু সুলতান নয়, এমন হাজার মুসলিম দরিদ্র শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার স্বপ্ন পূরণ করছে বিদ্যানন্দে আসা যাকাত ফান্ড। দুস্থ পরিবারের আয়ের পথ করার পাশাপাশি শিক্ষায় সহায়তা করাই এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য।