ছাত্রজীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল পড়াশোনা। বাবা-মা সব সময় চান যাতে তাদের সন্তানরা এই সময়টিকে পড়াশোনার কাজেই অতিবাহিত করেন। কিন্তু বর্তমানে যুগ পাল্টেছে। এখনকার ছাত্র-ছাত্রীরাও (Students) আগের থেকে অনেক বেশি আধুনিক। তাঁরা অল্প বয়স থেকেই নিজেদের পড়াশোনাকে ঠিক রেখে পাশাপাশি অন্যান্য কাজের দিকে উৎসাহ প্রকাশ করেন। আর সেই সমস্ত কাজ থেকে বেশ ভালো উপার্জনও (Income) করতে পারেন। এর মাধ্যমে ছোটখাটো জিনিসের জন্য বাবা-মায়ের উপর নির্ভর করতে হয় না তাদেরকে।
সাধারণত ছাত্র জীবনে টিউশনি করা একটি বহু পুরনো কাজ। এখনও পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা এই কাজটি করেন। কিন্তু এই ছাড়াও আরও বেশ কিছু কাজ এমন রয়েছে যেগুলি ছাত্রছাত্রীরা অনায়াসে করতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক কী কী কাজ রয়েছে যেগুলি ছাত্রছাত্রীরা নিজের উদ্যোগে চাইলেই করতে পারেন।
১. ক্রাফটিং (Crafting): ছোটবেলায় আমরা প্রত্যেকেই স্কুলে রঙিন কাগজ কেটে ফুল পাখি তৈরি করা শিখেছি। কেউ কেউ স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর পর সেইসব কাজ থেকে অনেক দূরে চলে এসেছেন। কিন্তু অনেক ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেন যারা ছবি আঁকতে কোন কিছু তৈরি করতে ভীষণ পছন্দ করেন। এই ক্রাফটিং এর মাধ্যমে তৈরি করতে পারেন বহু সুন্দর জিনিস, যা বিক্রি যোগ্য। বর্তমানে জন্মদিন কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠান সবকিছুতেই ইভেন্ট প্ল্যখনাররা ভেনিউ হ্যান্ড ক্রাফ্ট দিয়ে সাজাতে চান। সে ক্ষেত্রে বাজারে ক্রাফটিং এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।
২. ভিডিও এডিটিং (Video Editing): যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে প্রযুক্তির হাত ধরতেই হবে। এই যুগে ছাত্রদের মধ্যে অত্যন্ত চাহিদা সম্পন্ন কাজ গুলির মধ্যে একটি হল ভিডিও এডিটিং। অনেকে এমন রয়েছে যারা ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করেন। আর নিজের ভিডিও নিজেকেই এডিট করতে হয়। এর জন্য অবশ্য আলাদা কোর্স রয়েছে। কিন্তু চাইলে ইউটিউব থেকেও ভিডিও এডিটিং শেখা যেতে পারে। যদি কিছুটা টাকা খরচ করে ভালো কোন সংস্থা থেকে এডিটিং শেখা যায় তাহলে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলিতে এই কাজের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।
৩. কনটেন্ট রাইটিং (Content Writing): যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা লেখালেখি করতে বেশ ভালোবাসেন, তাঁরা কন্টেন্ট রাইটিংকে ছাত্র জীবনে নিজেদের পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রয়োজন লেখার দক্ষতা ,ভাষাগত দক্ষতা, উপযুক্ত শব্দ চয়নের দক্ষতা এবং কোন একটি বিষয়কে রিসার্চ করে সঠিকভাবে উপস্থাপনের ক্ষমতা। বর্তমানে এমন বহু কন্টেন্ট রাইটিং এজেন্সি রয়েছে যারা এইরকম কনটেন্ট রাইটারদের কাজ দিয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে ভালো উপার্জন করা যায়। আর কনটেন্ট রাইটিংয়ের জগতে যদি নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হয়, তাহলে প্র্যাকটিসের কোন বিকল্প নেই।
৪. অনলাইন টিউশন (Online Tuition): কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা যুগ যুগ ধরে টিউশন পরিয়ে আসেন। কিন্তু এখন সময় পরিবর্তন হয়েছে। অফলাইনে পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনেও পড়াশোনার খুব চাহিদা বেড়েছে। কাজেই এমন বহু ওয়েবসাইট রয়েছে যারা এই ধরনের কলেজ পড়ুয়া বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করেন নিজেদের ওয়েবসাইটে। সেখানে অনলাইনে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয়। তাদের সমস্যা সমাধান করা হয়। এর মাধ্যমেও মাসের শেষে ভালো টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
৫. গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design): কোন ছাত্র-ছাত্রী যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনে ভালো জ্ঞান সঞ্চয় করে থাকে তাহলে তাদের জন্য উপার্জনের পথ বহু দিকেই খোলা রয়েছে। এটি বর্তমানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে নানান ধরনের কর্ম প্রতিষ্ঠানেও গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদা রয়েছে তুঙ্গে। পোস্টার, ব্রশিয়ার সহ আরও বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা হয় গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও এটি শিখতে নির্দিষ্ট কিছু কোর্সের পেছনে টাকা বিনিয়োগ করতে হয় ঠিক কথা, কিন্তু সঠিকভাবে রপ্ত করতে পারলে এর থেকে ছাত্রছাত্রীরা ঘরে বসে মোটা অঙ্কের টাকাও উপার্জন করতে পারেন।
সূত্র:প্রথম কলকাতা